Rahamania Mission

  1. Home
  2. Eng
  3. Beng
  4. Math
  5. P.Sc
  6. L.sc
  7. Hist
  8. Geo

  • SET 1
  • SET 2
  • SET 3
  • SET 4
  • SET 5
  • ১. জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি কাকে বলে?

    উত্তর। জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি:যে মন্থর কিন্তু অবিরাম গতিশীল প্রক্রিয়ায় সকল পূর্বপুরুষ বা উদবংশীয় জীব থেকে নতুন ও অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বিবর্তন বা অভিব্যক্তি বলে।

    ২. তপ্ত লঘু সুপ হাই ডাইলিউট সুপ কী?

    উত্তর। তপ্ত লঘু সুবা হট ডাইলিউট সুপ: অ্যামাইনো এসিড, ফ্যাটি এসিড ,শতকরা ও অন্যান্য জটিল জৈব যৌগের উৎপত্তি হয়েছিল সম্ভবত সমুদ্রের জলে। বিজ্ঞানী হেলদেন ওইসব জৈব যৌগ মিশ্রিত গরম সমুদ্রের জল কে তপ্ত লঘু সুপ বা হট ডাইলিউট সুপ বলে আখ্যা দেন। এই গরম, তরল সুপেই এই প্রাণের উৎপত্তি ঘটেছিল।

    ৩. রাসায়নিক বা কেমোজেনি বিবর্তন কি?

    উত্তর। রাসায়নিক বা কেমোজেনি বিবর্তন: পৃথিবী সৃষ্টির পর, বিজারক বা কেমোজেনি পরিবেশে নানা প্রকার অজৈব যৌগ (CH4,NH3,H2O,CO2)UV রশ্মি, উচ্চ তাপমাত্রা ও বিদ্যুৎস্ফরণের ওভাবে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে জটিল জৈব যৌগ সৃষ্টি করে যা থেকে পরবর্তীকালে প্রাণের আবির্ভাব ঘটে। সরল, অজৈব যৌগ থেকে জটিল জৈব যৌগ সৃষ্টির পদ্ধতি কে রাসায়নিক বিবর্তন বা কেমোজেনি বলে।

    ৪. কোয়াসারভেট কি?

    উত্তর: কোয়াসারভেট: রাসায়নিক বিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বৃহৎ জৈব যৌগ গুলি আন্তরাণবিক বল দ্বারা পরস্পর আকৃষ্ট হয় ও গরম তরল সুপ থেকে আলাদা হয়ে বড় কোলয়েড বিন্দু তৈরি করে। এগুলকে কোয়াসারভেট বলে

    ৫. কোয়াসারভেট এর গুরুত্ব কি?

    উত্তর। কোয়াসারভেট গুরুত্ব: কোশের সজীব অংশ বা প্রোটোপ্লাজমের গঠনের সঙ্গে কোয়াসারভেটএর কোলয়েডের গঠনের মিল থাকায় কোয়াসারভেট কে প্রথম সৃষ্ট জীবের পূর্ব গঠন বলে গণ্য করা হয়। কোয়াসারভেটই জীব সৃষ্টিতে কে সাহায্য করেছিল।

    ৬.প্রোটোবায়ন্ট কি?

    উত্তর। প্রোটোবায়োন্ট : পরিবেশের জলীয় দ্রবণ থেকে পৃথক হয়ে উৎপন্ন আদি জীব—যে বৃহদাকার জৈব অণু সমষ্টির প্রজনন ক্ষমতা না থাকলেও নিজস্ব অভ্যন্তরীণ রাসায়নিক পরিবেশ বর্তমান, তাকে প্রােটোৰায়ন্ট বলে। দুটি উল্লেখযােগ্য প্রোটোবায়োন্ট হল কোয়াসারভেট ও মাইক্রোস্ফিয়ার।

    ৭.মাইক্রোস্ফিয়ার কী?

    উত্তর। মাইক্রোস্ফিয়ার : অসংখ্য প্রােটিনয়েড অপু জলীয় মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে কোয়সারভেটের মতাে যে গঠন তৈরি করে,তাকে মাইক্রোস্ফিয়ার বলে। এগুলি লিপিড পর্দাবৃত ও বিভাজনে সক্ষম। বিজ্ঞানী সিডনি ফক্সের মতে মাইক্রোস্ফিয়ার থেকে আদি জীব সৃষ্টি হয়।

    ৮. স্ট্যানলি মিলার ও হ্যারল্ড উরের পরীক্ষায় কি কি গ্যাস কি অনুপাতে নেওয়া হয়েছিল?

    উওর। স্ট্যানলে মিলার ও হ্যারল্ড উরের পরীক্ষায় নেওয়া গ্যাসের অনুপাত : মিলার ও উরের পরীক্ষার মিথেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন ও জলীয়বাষ্প নেওয়া হয়েছিল।

    পরীক্ষায় মিথেন, অ্যামোনিয়া, ও হাইড্রোজেন ও জলীয় বাষ্পের অনুপাত ছিল,2:2:1:1।

    ৯. সিডনি ফক্স কীভাবে প্রোটিনেয়েড তৈরি করেন?

    উত্তর। সিডনি ফক্স-এর প্রোটিনেয়েড : সিডনি ফক্স(1957) প্রায় 18টি অ্যাসিড একত্রিত করে তাতে তাপ প্রয়ােগ করে তা ঠান্ডা করেন। অ্যামাইনাে অ্যাসিড গুলিকে পরস্পর যুক্ত করে প্রোটিন বা পলিপেপটাইডের অনুরূপ প্রােটিনয়েড তৈরি করেন। বিজ্ঞানী সিডনি ফক্সের মতে আদিকোশ গঠনে প্রােটিনয়েডের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

    ১০. হ্যান্ডেল ও ওপারিন মতবাদ কি?

    উত্তর। ওপারিন ও হেলডেন- এর মতবাদ: ওপারিন (1924) ও হ্যালডেনের (1929) মতবাদকে'রাসায়নিক বিবর্তনবাদ'বলা হয়। তাদের মতে পৃথিবীর আদিম পরিবেশে তড়িৎ ঝড়, সৌরবিকিরণ,অগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ও তেজস্ক্রিয়তার কারণে এবং সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি,মহাজাগতিক রশ্মি ইত্যাদির প্রভাবে বায়ুমন্ডলের গ্যাসীয় পদার্থ গুলির মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটলে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণুর জৈব সৃষ্টি হয়।ক্রমে এই জৈব অণু গুলি মিলিত হয়ে বৃহৎ জৈব অণু সৃষ্টির মাধ্যমে জীব সৃষ্টির পথকে সুগম করে।

    ১১. মিলার ও উরের পরীক্ষা থেকে কী জানা যায়?

    উত্তর। মিলার ও উরের পরীক্ষা থেকে জানার বিষয়: মিলার ও উরের পরীক্ষা থেকে জানা যায় যে বিষয়গুলি, তা হল-(i)অজীবীয় বস্তু থেকে অজিবিও সংশ্লেষণের মাধ্যমে জৈব বস্তুর তথা জীবন সৃষ্টি হয়েছে। (ii)আদি পৃথিবীতে কোশের মত পদার্থ একইভাবে সৃষ্টি হয়েছিল।

    ১২. অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরন করতে কী বোঝো?

    উত্তর। অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরন: ল্যামার্কর মতে জীব তার জীবদ্দশায় যে বৈশিষ্ট্য অর্জন করে তা এক জনু থেকে পরবর্তী জনু তে সঞ্চারিত হয় এবং নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের উদ্ভব ঘটে।

    উদাহরণ: ছোট গলাযুক্ত জিরাফ-এর উঁচু ডাল থেকে পাতা খাওয়ার প্রচেষ্টার ফলশ্রুতি হিসাবে একটু একটু করে জিরাফের গলা লম্বা হয়েছে।

    ১৩. অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহার সূত্র বলতে কী বোঝো?

    উত্তর। অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহার সূত্র:জীব যদি ধারাবাহিকভাবে ক্রমাগত তার অঙ্গ ব্যবহার করে তাহলে অঙ্গটি সবল ও সুগঠিত হবে।অপরপক্ষে যদি কোন অঙ্গ ক্রমাগত ধারাবাহিকভাবে ও ব্যবহৃত হয় তাহলে অঙ্গটি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হবে বা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।

    ১৪. অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম কাকে বলে?

    উত্তর। অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম: ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বের প্রথম প্রতিপাদ্য বিষয় হল অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম। অর্থাৎ প্রতিটি জীব খাদ্য ও বাসস্থানের জন্য এবং নিজে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য যে সংগ্রাম করে, সেটি হল অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম। এই সংগ্রাম তিন রকমের

    যেমন-(i)অন্ত:প্রজাতি সংগ্রাম, (ii)আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম এবং(iii) পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম।

    ১৪. অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম কাকে বলে?

    উত্তর। অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম: ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বের প্রথম প্রতিপাদ্য বিষয় হল অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম। অর্থাৎ প্রতিটি জীব খাদ্য ও বাসস্থানের জন্য এবং নিজে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য যে সংগ্রাম করে, সেটি হল অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম। এই সংগ্রাম তিন রকমের

    যেমন-(i)অন্ত:প্রজাতি সংগ্রাম, (ii)আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম এবং(iii) পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম।

    ১৫. আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম বা সমপ্রজাতি সংগ্রাম কাকে বলে?

    উত্তর। আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম বা সমপ্রজাতি সংগ্রাম:একই প্রজাতির বিভিন্ন জীবের মধ্যে খাদ্য ও বাসস্থানের জন্য যে সংগ্রাম বা প্রতিযোগিতা দেখা যায় তাকেই অন্তঃপ্রজাতি বা সমপ্রজাতি সংগ্রাম বলে।

    উদাহরণ:একই স্থানে অবস্থানকারী দুটি কুকুর বা বিড়াল এর মধ্যে খাদ্য নিয়ে লড়াই।

    ১৬. পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম বলতে কী বোঝো?

    উত্তর। পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম: পৃথিবীর প্রতিটি জীবকে প্রতিকূল পরিবেশের (খরা, বন্যা, ভূমিকম্প, সুনামি, আয়লা ইত্যাদি) সঙ্গে প্রতিনিয়ত যে লড়াই বা সংগ্রাম লিপ্ত থাকতে হয়, তাকে পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম বলে।

    ১৭. প্রাকৃতিক নির্বাচন কী?

    উত্তর। প্রাকৃতিক নির্বাচন: যে স্বতঃস্ফূর্ত ধারাবাহিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় অনুকূল বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবেরা অন্যান্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বেশি সুযোগ সুবিধা লাভ করে এবং উপযুক্ত বংশধর সৃষ্টির মাধ্যমে দীর্ঘ ভৌগোলিক সময় অতিবাহিত করে তাকে প্রাকৃতিক নির্বাচন বলে।

    ১৮. প্রকরণ কী?

    উত্তর। প্রকরণ: যে সকল ছোটো ছোটো বৈশিষ্ট্য, একটি জীবকে সেই প্রজাতির অপর একটি জীব থেকে পৃথক করে এবং যে বৈশিষ্ট্যগুলি জীবকে ক্রমবিকাশে সাহায্য করে, তাদের প্রকরণ বলে।

    ১৯. ঘোড়ার জীবাশ্ম থেকে বিবর্তনের কি কি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য পাই?

    উত্তর। ঘোড়ার জীবাশ্ম থেকে প্রাপ্ত বিবর্তনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য:ঘোড়ার বিবর্তনের যেসব বিশেষ পরিবর্তন ঘটেছে সেগুলি হল-(i)দৈহিক উচ্চতা বৃদ্ধি,(ii) দেহের আকার ও আয়তনের পরিবর্তন, (iii)অগ্র ও পশ্চাৎপদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, (iv)সোজা ও শক্ত পৃষ্ঠীয় ভাগ,(v) পেছনের পায়ে আঙ্গুলের সংখ্যা হ্রাস।

    20. নয়া ডারউইনবাদ কি?

    উত্তর। নয়া ডারউইনবাদ: বিজ্ঞানী ভাইসম্যান এবং তার অনুগামীগন সুপ্রজনন বিদ্যার আলোকে ডারউইন বাদের পুনর্মূল্যায়ন বা সংশোধন করে নতুন তত্ত্ব উপস্থাপিত করেন, যা হলো নয়া ডারউইনবাদ। ডারউইনবাদ কোন একটি বিশেষ মতবাদ নয়, কতকগুলি মতবাদের সম্মিলিত রূপ। আধুনিক বংশগতি বিজ্ঞান, জিনবিজ্ঞান, পরিব্যক্তি, বাস্তুতন্ত্রবিদ্যা, প্রাণীর আচরণ বিদ্যা ইত্যাদি পরিপেক্ষিতে যে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক তথ্য পাওয়া যায়, তা হল নয়া ডারউইনবাদ।

    ২১. জীবাশ্ম কাকে বলে?

    উত্তর। জীবাশ্ম: সুদীর্ঘকাল যাবৎ শিলাস্তরে প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষিত অধুনালুপ্ত জীবদেহের সামগ্রিক বা আংশিক প্রস্তরীভূত বা তার অংশ বিশেষের ছাপকে জীবাশ্ম বলে।

    উদাহরণ: ঘোড়ার জীবাশ্ম, আর্কিওপটেরিক্স ইত্যাদি প্রাণী ও টেরিডোস্পাম হল উদ্ভিদ জীবাশ্ম।

    ২২. জীবন্ত জীবাশ্ম বলতে কী বোঝো?

    উত্তর। জীবন্ত জীবাশ্ম: যে সকল জীব-প্রজাতির সুদূর অতীতে উৎপত্তি লাভ করেও বিশেষ কোনরকম পরিবর্তন ছাড়াই পৃথিবীতে এখনো বেঁচে আছে এবং এক জীবগোষ্ঠী থেকে অন্য জীবগোষ্ঠী সৃষ্টির বিবর্তনজনিত বৈশিষ্ট্য বহন করেছে অথচ যাদের সমসাময়িক জীবেরা অনেকদিন আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে, তাদের জীবন্ত জীবাশ্ম বলে।

    উদাহরণ: পেরিপেটাস ও প্লাটিপাস।

    ২৩. সমসংস্থ অঙ্গ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

    উত্তর। সমসংস্থ অঙ্গ : জীবদেহের যে সকল অঙ্গের উৎপত্তিগত ও গঠনগত কাঠামো একই কিন্তু কার্যগত ভাবে আলাদা, তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে।

    উদাহরণ: পাখির ডানা ও বাদুড়ের ডানা, ঘোড়ার অগ্রপদ, তিমির ফ্লিপার ও মানুষের হাত ইত্যাদি সমসংস্থ অঙ্গ।

    ২৪. সমবৃত্তীয় অঙ্গ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

    উত্তর। সমবৃত্তীয় অঙ্গ: :জীবদেহের যে সকল অঙ্গের উৎপত্তি ও গঠন বিভিন্ন কিন্তু কাজ একই, তাদের সমবৃত্ত অঙ্গ বলে।

    উদাহরণ: পাখির ডানা, পতঙ্গের ডানা ও বাদুড়ের ডানা।

    ২৫. মিসিং লিংক কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

    উত্তর। মিসিং লিংক: যে সকল জীব (বর্তমানে জীবিত বা লুপ্ত) দুটি জীব গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যযুক্ত হয়েও অবিচ্ছিন্ন জৈব অভিব্যক্তির ধারণাকে ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে, তাদের মিসিং লিংক বা হারানো যোগসুত্র বলে।

    উদাহরণ: আর্কিওপটেরিক্স যা সরীসৃপ ও পাখির বৈশিষ্ট্য বহন করে।

    ২৬. নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলতে কী বোঝো? মানুষের দেহে অবস্থিত একটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গের নাম লেখ।

    উত্তর। নিষ্ক্রিয় অঙ্গ: জীবদেহে যে সকল অঙ্গ পূর্বপুরুষের দেহ বা নিকট সম্পর্কিত অন্য জীবদেহে সক্রিয় থাকলেও পরিবেশ ও চারিত্রিক পরিবর্তনের ফলে এবং দীর্ঘদিন ও ব্যবহারের কারণে বর্তমানে নিষ্ক্রিয়, ক্ষয়প্রাপ্ত ও ক্ষুদ্র অঙ্গে পরিণত হয়েছে, তাদের নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বা লুপ্তপ্রায় অঙ্গ বলে।

    মানবদেহের নিষ্ক্রিয় অঙ্গ:মানুষের দেহে অবস্থিত ভার্মিফর্ম অ্যাপেন্ডিক্স।

    ২৭. লুপ্তপ্রায় অঙ্গ অভিব্যক্তির সম্পর্ক কি?

    উত্তর। লুপ্তপ্রায় অঙ্গ ও অভিব্যক্তির সম্পর্ক: কেবলমাত্র অভিব্যক্তির সাহায্যে লুপ্তপ্রায় অঙ্গের উপস্থিতি ব্যাখ্যা করা যায়। বলা যায় যে, লুপ্তপ্রায় অঙ্গ বহনকারী জীবটির উৎপত্তি ঘটেছে এমন উদবংশীয় জীব থেকে যার দেহে উক্ত অঙ্গটি সক্রিয় ছিল। বর্তমানে যেসব জীবদেহে ওই অঙ্গটি সক্রিয় সেই সকল জীবও যে নিষ্ক্রিয় অঙ্গবিশিষ্ট জীব এবং তার উদবংশীয় জীবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সে- কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

    ২৮. মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীর দুটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গের নাম করো।

    উত্তর। মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীর দুটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গের নাম: (i) উট পাখির ডানা উড্ডয়ন পেশি (ii) সাপের পদ।

    ২৯. মানুষের অ্যাপেনডিক্সকে লুপ্তপ্রায় বা নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলে কেন?

    উত্তর। মানুষের অ্যাপেনডিক্স কে লুপ্তপ্রায় বা নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলার কারণ: মানুষের অ্যাপেনডিক্স, সিকাম নামক অঙ্গের নিষ্ক্রিয় রূপ। তৃণভোজী প্রাণী, যেমন-গরু, গিনিপিগ ইত্যাদিতে সিকম সক্রিয় অঙ্গ এবং আকারে বড়ো। সিকামে এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া থাকে যা সেলুলোজ পরিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের জন্য অঙ্গটির আর প্রয়োজন হয়না এবং কার্যকারিতাও হারিয়ে একটি ছোট ও নিষ্ক্রিয় অঙ্গ পরিণত হয়েছে।

    ৩০. কক্সিস কী?

    উদাহরণ। কক্সিস: মানুষের মেরুদন্ডের শেষ চারটি অস্তি মিলিত হয়ে যে অস্থিতি গঠন করে, কাকে কক্সিস বলে। মানুষের ক্ষেত্রে একটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গ, কিন্তু মানুষের পূর্বপুরুষে(একজাতীয় প্রাণী ) এটি সক্রিয় লেজের কশেরুকা নামে পরিচিত। এটি মানুষের কঙ্কালতন্ত্রে অবস্থিত।

    ৩১. সায়ানোজেন মতবাদ কি?

    উত্তর ।সায়ানোজেন মতবাদ: বিজ্ঞানী ফ্লুজারের মতে, উৎপত্তির পর থেকে পৃথিবীর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এই তাপমাত্রা কমতে থাকায় সময় কার্বন ও নাইট্রোজেন নিলে সায়ানোজেন নামে এক প্রকার প্রোটিন যৌগ গঠিত হয় ও এই প্রোটিন থেকেই প্রোটোপ্লাজমের উদ্ভব হয়। এই মতবাদকে সায়ানোজেন মতবাদ বলে।

    ৩২. মিউটেশন বা পরিব্যক্তি কাকে বলে?

    উত্তর। মিউটেশন বা পরিব্যক্তি: ক্রোমোজোম জীনের আকস্মিক পরিবর্তনকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলে। মিউটেশন -এর ফলে যে জীবের সৃষ্টি হয়, তাকে মিউট্যান্ট বলে। এর ফলে কখনো- কখনো ভালো বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব ঘটতে পারে। আবার কখনো খারাপ বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হতে পারে।

    ৩৪. জৈব অভিব্যক্তি অঙ্গসংস্থানগত প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন মেরুদন্ডী প্রাণীগোষ্ঠীর হৃৎপিন্ডের মৌলিক গঠন থেকে কী জানা যায়?

    উত্তর। জৈব অভিব্যক্তি অঙ্গসংস্থানগত প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন মেরুদন্ডী প্রাণীগোষ্ঠীর হৃদপিন্ডের মৌলিক গঠন থেকেযা জানা যায়: মেরুদন্ডী প্রাণীদের (মাছ, উভচর, সরীসৃপ, পাখি ও স্তন্যপায়ী) হৃদপিন্ডের মৌলিক গঠনের তুলনামূলক আলোচনা করলে দেখা যায় যে, নিম্নস্তরের প্রাণী থেকে উচ্চস্তরের প্রাণীদের মধ্যে পরিবেশগত অভিযোজনের ফলে অঙ্গ গঠনে ক্রমশ জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও তাদের মূল গঠন কাঠামো একই।

    ৩৫. কোশীয় জীব সৃষ্টির পর্যায় গুলি কি কি?

    উত্তর।কোশীয় জীব সৃষ্টির ধারাবাহিক পর্যায়: (i) জৈব রাসায়নিক সংশ্লেষ,(ii) নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন গঠন, (iii)নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিনের সংযোগ,(iv) নিউক্লিও প্রোটিন এর পদার্থ অন্তর্ভুক্তি, (v)প্রাথমিক কোশীয় জীব এর আবির্ভাব।

    ৩৬. অভিযোজন কাকে বলে?

    উত্তর।অভিযোজন : পরিবর্তিত পরিবেশে স্থায়ীভাবে বসবাস ও বংশ বৃদ্ধির জন্য জীব বা জীব সম্প্রদায়ের যে গঠনগত, শরীরবৃত্তীয় ও আচরণগত পরিবর্তন ঘটে , তাকে অভিযোজন বলে।

    ৩৭. অভিযোজিত বিকিরণ কাকে বলে?

    উত্তর।অভিযোজিত বিকিরণ: বিবর্তন গত যোগসুত্র থাকা সত্বেও ভিন্ন পরিবেশে বসবাসের জন্য একই শ্রেণীভূক্ত প্রাণীর ভিন্ন ভিন্ন অভিযোজন কে অভিযোজিত বিকিরণ বলে

    ৩৮. অভিসারী অভিযোজন কি?

    উত্তর।অভিসারী অভিযোজন: একই পরিবেশে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণী গোষ্ঠীর একই রকম অভিযোজন দেখা যায়। এইরকম অভিযোজন কে অভিসারী অভিযোজন বলে।

    উদাহরণ: মাছ (মৎস্য শ্রেণীভুক্ত), কচ্ছপ (সরীসৃপ শ্রেণী), পেঙ্গুইন (পক্ষী শ্রেণি), তিমি শীল (স্তন্যপায়ী বা ম্যামেলিয়া) প্রভৃতি প্রাণী পৃথক শ্রেণীভুক্ত হওয়া সত্বেও জলীয় পরিবেশে বাস করার জন্য তাদের প্রায় একই রকমের অঙ্গসংস্থানিক অভিযোজনগত সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

    ৩৯. অপসারী বা ডাইভারজেন্ট অভিযোজন কি?

    উত্তর।অপসারী অভিযোজন: এএকই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত জীবেরা ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বসবাস করার জন্য বিভিন্ন অঙ্গের গঠনগত কার্যগত পরিবর্তন ঘটে। এইরকম অভিযোজন কে অপসারী অভিযোজন বা ডাইভারজেন্ট অভিযোজন বলে।

    ৪০. সমান্তরাল অভিযোজন কাকে বলে?

    উত্তর।সমান্তরাল অভিযোজন: পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বিভিন্ন প্রজাতির একই রকম বাসস্থানে বাস করার জন্য একই প্রকার অভিযোগ লক্ষ্য করা যায়। এদের সমান্তরাল অভিযোজন বদলে।

    উদাহরণ: থর মরুভূমির গিরগিটি ও দক্ষিণ আমেরিকার মরু গিরগিটি। যদিও এরা ভিন্ন প্রজাতির অথচ মরু অভিযোজিত বৈশিষ্ট্য একই প্রকার।

    ৪১.মুখ্য বা প্রাথমিক অভিযোজন কাকে বলে?

    উত্তর।বিবর্তনের মাধ্যমে যে পরিবেশে জীবের জন্ম ও বিকাশ ঘটে সেই পরিবেশই ওই জীবের অভিযোজন ঘটে, তাকে মুখ্য বা প্রাথমিক অভিযোজন বলে।

    উদাহরণ: মাছের স্বাভাবিক বাসস্থান জল এবং জলে বসবাস করার জন্যই তাদের মাকু আকৃতির দেহ গঠন, পটকার উপস্থিতি, জোড়-বিজোড় পাখনা, ফুলকা ইত্যাদি আবির্ভাব ঘটেছে যেগুলি প্রাথমিক অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য।

    ৪২. গৌণ অভিযোজন কাকে বলে?

    উত্তর।গৌণ অভিযোজন:কোন নির্দিষ্ট পরিবেশে কোন জীবের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটলেও কোন বিশেষ কারণে সেই জীবকে অন্য কোন প্রাকৃতিক পরিবেশে ওই পরিবেশের উপযোগী বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য যে অভিযোজন ঘটে, তাকে গৌণ অভিযোজন বলে।

    উদাহরণ: কই, শিঙ্গি, মাগুর মাছ ডাঙায় বেশ কিছুক্ষণ থাকার উপযোগী অঙ্গ হিসেবে অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র তাদের গৌণ অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য।

    ৪৩. রুই মাছ কে কেন মুখ্য জলজ প্রাণী বলে?

    উত্তর।রুই মাছকে মুখ্য জলজ প্রাণী বলার কারণ:রুই মাছ জলজ পূর্বপুরুষ থেকে সৃষ্টি হয়েও বর্তমানে সার্থকভাবে জলে বাস করে তাই রুই মাছকে মুখ্য জলজ প্রাণী বলে।

    ৪৪. জাঙ্গল উদ্ভিদ কাদের বলে?

    উত্তর।জাঙ্গল উদ্ভিদ:যে সকল উদ্ভিদ শুষ্ক মরু অঞ্চলের শুষ্ক বালুকাময়, শিলাযুক্ত মাটিতে ও অল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত উষ্ণ আবহাওয়ায় জন্মায়, তাদের জাঙ্গল উদ্ভিদ বলে।

    উদাহরণ: ফনিমনসা, তেসিরা মনসা, বাজবরণ প্রভৃতি।

    ৪৫. ক্যাকটাস কে জঙ্গল উদ্ভিদ বলার কারণ কি?

    উত্তর।ক্যাকটাস কে জঙ্গল উদ্ভিদ বলার কারণ:ফনিমনসা জাতীয় উদ্ভিদগোষ্ঠীকে ক্যাকটাস বলে। ক্যাকটাস শুষ্ক মরু অঞ্চলে জন্মায়, তাই এদের জঙ্গল উদ্ভিদ বলে।